পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আবারও সংসদে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ করার দাবি জানিয়ে টিএমসি সাংসদ বলেন, এই নামটি রাজ্যের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটায়। রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে এই বিষয়টি উত্থাপন করে সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সর্বসম্মতিক্রমে রাজ্যের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাস করেছে। কেন্দ্র এখনও এটি অনুমোদন করেনি। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন এবং বলেছিলেন যে নামকরণটি রাজ্যের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের সঙ্গে মিলে যায় এবং এখানকার মানুষের আকাঙ্ক্ষাকেও প্রতিফলিত করে। ১৯৪৭ সালে বাংলা বিভক্ত হয়। ভারতের অংশের নাম ছিল পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্য অংশের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান। ১৯৭১ সালে, পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা ঘোষণা করে এবং বাংলাদেশ নামে নতুন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে আজ পূর্ব পাকিস্তান নেই।
ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে বিধানসভায় সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন শুধু একটি প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, এটি আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। বাংলা নামটি আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত, এবং এটি আমাদের ভাষা ও ইতিহাসের অংশ।” সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের রাজ্যের নাম পরিবর্তন করা দরকার। পশ্চিমবঙ্গের জনগণের রায়কে সম্মান করা উচিত। “প্রসঙ্গত দেশে শেষবার কোনও রাজ্যের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল ২০১১ সালে, যখন উড়িষ্যার নাম পরিবর্তন করে ওড়িশা রাখা হয়েছিল।” তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে অনেক শহরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বোম্বে, যা ১৯৯৫ সালে মুম্বাই, ১৯৯৬ সালে মাদ্রাজ থেকে চেন্নাই, ২০০১ সালে ক্যালকাটা থেকে কলকাতা এবং ২০১৪ সালে ব্যাঙ্গালোর থেকে বেঙ্গালুরু করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, এর আগে, ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার বলেছেন, বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভাষাকে সম্মান জানিয়ে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করা উচিত। তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে এর কোনও বাস্তব পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। এছাড়াও, তৃণমূল কংগ্রেসের মমতা ঠাকুর গঙ্গাসাগর মেলার পৌরাণিক গুরুত্ব তুলে ধরে এটিকে জাতীয় মেলার মর্যাদা দেওয়ার দাবি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন যে এই বছর এখন পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি মানুষ সেখানে ডুব দিয়েছেন এবং এই সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, কোনও কেন্দ্রীয় সাহায্য ছাড়াই রাজ্য সরকার তীর্থযাত্রীদের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে।
