December 6, 2025
15

যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ওপর। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি এইচ-১বি ভিসা আবেদনের জন্য বছরে ১ লক্ষ মার্কিন ডলার ফি দিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে অন্তত ১২ মাস, এবং প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে।

এই নীতিগত পরিবর্তনের ফলে অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, অ্যাপল, গুগল, মেটা, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS), ইনফোসিস, উইপ্রো, এবং অন্যান্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ওপর বড়সড় আর্থিক চাপ পড়বে। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে অনেকেই প্রতিবছর হাজার হাজার এইচ-১বি ভিসা আবেদন করে, যার মাধ্যমে তারা বিদেশি দক্ষ কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োগ দেয়।

২০২৫ সালের ইউএসসিআইএস (USCIS) তথ্য অনুযায়ী, অ্যামাজন সর্বোচ্চ ১০,০৪৪টি এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন পেয়েছে, যার পরেই রয়েছে TCS—৫,৫০৫টি অনুমোদন। মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল, এবং গুগলও কয়েক হাজার ভিসা অনুমোদন পেয়েছে। এই ফি বৃদ্ধির ফলে শুধুমাত্র TCS-এর ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত খরচ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা।

প্রশাসনের দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো “সিস্টেমেটিক অ্যাবিউজ” বন্ধ করা এবং মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা। হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিদেশি STEM কর্মীর সংখ্যা ১.২ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২.৫ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যেখানে সামগ্রিক STEM চাকরির বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪৪.৫ শতাংশ।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ফি বৃদ্ধি প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর জন্য অপারেশনাল ব্যয় বাড়াবে এবং মার্কিন বাজারে দক্ষ কর্মী নিয়োগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়বে বেশি, কারণ তারা এইচ-১বি ভিসার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

তবে, প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। অনেকেই নীতিগত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি শিল্পে কর্মী নিয়োগের গতিপথে বড় পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *