গুয়াহাটি, ৯ অক্টোবর ২০২৫ — জনপ্রিয় অসমিয়া গায়ক জুবিন গার্গের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর আত্মীয় ও অসম পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (DSP) সন্দীপন গার্গকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য CID। গত মাসে সিঙ্গাপুরে সমুদ্রস্নানের সময় জুবিনের মৃত্যু হয়, এবং সেই সময় সন্দীপন তাঁর সঙ্গে একটি ইয়টে উপস্থিত ছিলেন।
CID-এর বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) সন্দীপনকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করে এবং কামরূপ মেট্রোপলিটন জেলার মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (CJM) আদালতে পেশ করে। আদালত তাঁকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর অধীনে হত্যা, অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড এবং অবহেলার কারণে মৃত্যু ঘটানোর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
এই মামলায় সন্দীপন গার্গ হলেন পঞ্চম ব্যক্তি যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে উৎসব আয়োজক শ্যামকানু মহান্ত, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং তাঁর দুই ব্যান্ড সদস্য — শেখর জ্যোতি গোস্বামী ও অমৃত প্রভা মহান্ত — পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। CID সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরে জুবিনের সঙ্গে থাকা আরও ১১ জন ভারতীয় নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র একজন — রূপকমল কলিতা — হাজির হয়েছেন।
জুবিনের স্ত্রী গরিমা শইকিয়া গার্গ এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন এবং ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, তদন্তের চার্জশিট তিন মাসের মধ্যে জমা দেওয়া হবে এবং দোষীদের কোনওভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
সন্দীপন গার্গ ২০২২ ব্যাচের অসম পুলিশ সার্ভিস (APS) অফিসার, যিনি অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণির (EWS) কোটা থেকে PSC পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁর বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি সংক্রান্ত বিষয়টিও তদন্তাধীন রয়েছে।
এই ঘটনায় অসম জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং জুবিন গার্গের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে। CID জানিয়েছে, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় সব আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
