ত্রিপুরা টেট ২-এ পরীক্ষায় রাজ্যসেরা হয়ে নজির গড়েছেন দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থী পাপন সূত্রধর। তিনি এবার টেট ২-এ পরীক্ষায় ১৫০-র মধ্যে ১২১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত পরীক্ষার্থী হয়েছেন। তাঁর এই অসাধারণ সাফল্যের প্রশংসা করেছেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। আজ মন্ত্রী নাথ মোহনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিজয়নগরে পাপনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁকে অভিনন্দন জানান। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী বলেন, “এই বছরের টেট ২-এ ফলাফল গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে। টেট ১-এ প্রায় ৬ শতাংশ এবং টেট ২-এ প্রায় ৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। ধীরে ধীরে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। শিক্ষার্থীরাও এখন মানসম্পন্ন শিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে শিখেছে।”
তিনি জানান ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার গঠনের পর থেকে সরকার গুণগত শিক্ষা প্রদানের জন্য কাজ করে চলেছে, যার স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে টেট পরীক্ষার ফলাফলে। টেট পেপার ১-এ পাসের হার হয়েছে ৫.৫৬% এবং টেট পেপার ২-এ পাস করেছে ৪.৯২% পরীক্ষার্থী, যেখানে আগে এই হার ছিল প্রায় ১.৪% এবং ০.৮৬ %। বিজয়নগরের বাসিন্দা পাপন মোট ৩২,২৮৬ পরীক্ষার্থীর সঙ্গে বসেছিলেন এই পরীক্ষায়। পাপন ঈগণও থেকে ইতিহাসে এম.এ করেছেন এবং বর্তমানে এম.এড. কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “পাপন সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন হয়েও ৮১% নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছে। এস.টি, এসসি এবং দিব্যাঙ্গজনদের জন্য কাট-অফ মার্ক ছিল ৮৩। তাঁর এই কৃতিত্ব এক অটুট ইচ্ছাশক্তি এবং অধ্যবসায়ের উদাহরণ”, বলেন মন্ত্রী নাথ। মন্ত্রী নাথ আরও জানান, তিনি ত্রিপুরা শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. প্রত্যুষ রঞ্জন দেব-এর সঙ্গে পাপনের ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করেন।
“ড. দেব তাঁকে ফোনে শুভেচ্ছা জানান এবং ভবিষ্যতের জন্য সমস্তরকম সহায়তার আশ্বাস দেন,” বলেন মন্ত্রী।“আমরা তাঁদের দিব্যাঙ্গজন বলেই গর্ব অনুভব করি, এবং পাপন হল সেই উদাহরণ, যেখানে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় আর অদম্য মনোবল সবকিছুকে জয় করতে পারে”, বলেন রতন লাল নাথ। পাপন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলে ২০০৮ সালে পাপন নারসিংগড়ের দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তখন মন্ত্রী রতন লাল নাথ একজন বিধায়ক ছিল এবং সেই সময় পাপনকে ভর্তির ক্ষেত্রে সহায়তা করেছিল। পাপন আরো জানায় যে, ২০২২ সালে সে টেট-১ উত্তীর্ণ হয়েছিল, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের কিছু নিয়মের কারণে তা বাতিল হয়ে যায় । পরে সে সংকল্প করে যে টেট-২ পরীক্ষায় বসবে এবং উত্তীর্ণ হবে ।
