গুয়াহাটি/সিঙ্গাপুর, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — অসমের সাংস্কৃতিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, জনপ্রিয় গায়ক ও সুরকার জুবিন গার্গ শুক্রবার সিঙ্গাপুরে এক স্কুবা ডাইভিং দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫২ বছর।
জুবিন গার্গ সিঙ্গাপুরে উত্তর-পূর্ব ভারত উৎসবে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি সেদিনই পারফর্ম করার কথা ছিল। উৎসবের আয়োজক সূত্রে জানা যায়, স্কুবা ডাইভিং চলাকালীন তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন এবং সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আইসিইউ-তে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসকদের চেষ্টায় তাঁকে বাঁচানো যায়নি।
এই আকস্মিক মৃত্যুর খবরে অসম সহ গোটা দেশের সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক্স-এ লিখেছেন, “আজ অসম তার প্রিয় সন্তানকে হারাল। জুবিন গার্গ শুধু একজন গায়ক ছিলেন না, তিনি ছিলেন অসমের আত্মার প্রতিচ্ছবি।” সাংসদ রিপুন বোরা এবং অভিনেতা আদিল হুসেন সহ বহু বিশিষ্টজন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
জুবিন গার্গ তাঁর দীর্ঘ সংগীতজীবনে অসমীয়া, বাংলা, হিন্দি সহ ৪০টিরও বেশি ভাষায় গান গেয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয় গান ‘ইয়া আলি’ (গ্যাংস্টার) তাঁকে জাতীয় খ্যাতি এনে দেয়। তিনি ১২টি বাদ্যযন্ত্রে দক্ষ ছিলেন এবং অসমের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত গায়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
২০০২ সালে তাঁর বোন ও শিল্পী জংকি বোরঠাকুরের মৃত্যুর পর তিনি ‘শিশু’ নামক একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন, যা তাঁর ব্যক্তিগত শোককে সংগীতের মাধ্যমে প্রকাশ করে। ২০২২ সালে দিগবইয়ে তাঁর নামে একটি ২০ ফুট উঁচু মূর্তি স্থাপন করা হয় এবং ২০২০ সালে তেঙ্গাপানি গ্রামে তাঁর নামে একটি বাঁশের সেতু উদ্বোধন করেন তিনি।
সিঙ্গাপুর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অসম সরকার তাঁর স্মৃতিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে। তাঁর মৃত্যুতে অসমের সংগীতজগত এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হল। তাঁর গান, তাঁর কণ্ঠ, এবং তাঁর সাংস্কৃতিক অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
