আইজল, ১৮ আগস্ট — মিজোরাম রাজ্যে ২০২০ সালের জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১,১০৩টি বিদেশি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছিল। রাজ্যের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন (EF&CC) দপ্তরের অধীনস্থ ওয়াইল্ডলাইফ ডিভিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়েছে অসম রাইফেলস, সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF), রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তর, কাস্টমস, রাজ্য পুলিশ এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে।
উদ্ধার হওয়া প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল বিভিন্ন প্রজাতির গিরগিটি—সংখ্যা ৫০০-র বেশি। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে নানা ধরনের পাখি, সাপ, কুমির এবং অ্যালিগেটর। এই প্রাণীগুলি সাধারণত ছোট খাঁচায় পরিবহন করা হয় এবং দীর্ঘ সময় খাদ্য ও যত্নের অভাবে অনেকেই গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পৌঁছায়। আইনি নির্দেশে প্রাণীগুলিকে আইজলের লুংভেরহ অঞ্চলের চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়, যেখানে অনেক প্রাণী চিকিৎসার আগেই মারা যায় বলে জানিয়েছেন চিড়িয়াখানার এক কর্মকর্তা।
মিজোরামের সীমান্তবর্তী অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক উত্তেজনার কারণে রাজ্যটি বহুদিন ধরেই কালোবাজারি ও পাচারের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। মাদক পাচারের পাশাপাশি এখন বন্যপ্রাণী পাচারও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী পাচার রোধে সক্রিয় হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার না করলে এই সমস্যা সহজে সমাধান হবে না।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে রাজ্যজুড়ে আহত দেশীয় প্রাণীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজও চলছে। ইতিমধ্যে ১১৬টি দেশীয় প্রাণী সুস্থ করে বনাঞ্চলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বন দপ্তর।
এই পরিস্থিতি মিজোরামে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও পাচার রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।
