অসমের মাজুলির ঐতিহ্যবাহী লাল বাও ধান আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করল এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। সম্প্রতি, ২৬৭ মেট্রিক টন লাল বাও ধান রপ্তানি করা হয়েছে বিশ্বব্যাপী প্রক্রিয়াকরণের জন্য, যা রাজ্যের কৃষি ও রপ্তানি খাতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
এই ধান জাতটি তার অনন্য লালচে রঙ, পুষ্টিগুণ এবং জৈব উৎপাদন পদ্ধতির জন্য পরিচিত। মাজুলির নদীবেষ্টিত ভূপ্রকৃতি ও জৈব কৃষি অনুশীলন এই ধানকে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে আন্তর্জাতিক খাদ্য বাজারে।
অসম সরকারের কৃষি ও রপ্তানি দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, “লাল বাও ধান শুধু একটি ফসল নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও কৃষকদের জীবিকার প্রতীক। আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্যসচেতন ভোক্তাদের মধ্যে।”
রপ্তানির এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে অসম কৃষি বিপণন বোর্ড, এপি ইডা, এবং ভারতীয় রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (APEDA)। ধানগুলো মূলত ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে পাঠানো হয়েছে, যেখানে জৈব ও ঐতিহ্যবাহী খাদ্যপণ্যের চাহিদা ক্রমবর্ধমান।
স্থানীয় কৃষক বিপুল বরুয়া বলেন, “এই রপ্তানি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে আরও বেশি কৃষক এই ধান চাষে আগ্রহী হবেন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের স্থান আরও মজবুত হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ শুধু কৃষকদের আয় বাড়াবে না, বরং মাজুলির জৈব কৃষিকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে তুলে ধরবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই লাল বাও ধানকে জিআই ট্যাগ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতে এর বাজারমূল্য ও পরিচিতি আরও বাড়াবে।
এই রপ্তানি কার্যক্রম অসমের কৃষি রপ্তানি নীতির একটি সফল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা স্থানীয় উৎপাদনকে বৈশ্বিক সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত করছে।
