আসামের কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান ও টাইগার রিজার্ভে সম্প্রতি পরিচালিত এক দ্রুত জৈববৈচিত্র্য জরিপে উদ্ঘাটিত হয়েছে এক বিস্ময়কর জগত। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত কাজিরাঙা পার্ক কর্তৃপক্ষ ও ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (WII) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এই জরিপে চিহ্নিত হয়েছে ৭৭টি স্বাদুপানির মাছের প্রজাতি এবং ১০৮টি উভচর ও সরীসৃপ প্রজাতি।
এই জরিপে দেখা গেছে, কাজিরাঙার বিস্তীর্ণ ঘাসভূমির নিচে রয়েছে এক প্রাণবৈচিত্র্যে ভরপুর জলজ ও স্থলজ বাস্তুতন্ত্র, যা শুধু উদ্যানের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে না, বরং আসামের ২১৬টি স্থানীয় মাছের প্রজাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশকেই ধারণ করে। এই আবিষ্কার কাজিরাঙার ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদাকে আরও দৃঢ় করে।
কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান ও টাইগার রিজার্ভের অধিকর্তা সোনালী ঘোষ জানান, এই জরিপের মাধ্যমে উদ্যানের কম পরিচিত বাস্তুতন্ত্রের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতের সংরক্ষণ পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, “এই ফলাফল আমাদের দেখায় যে কাজিরাঙা শুধু বাঘ বা গণ্ডারের আবাসস্থল নয়, বরং এটি এক বিস্তৃত ও সংবেদনশীল বাস্তুতন্ত্রের প্রতীক।”
জরিপে অংশগ্রহণকারী গবেষকরা জানান, এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই স্থানীয় এবং কিছু প্রজাতি বিরল বা বিপন্ন তালিকাভুক্ত। এই তথ্য ভবিষ্যতে সংরক্ষণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই উদ্যোগ কাজিরাঙার পরিবেশগত গুরুত্বকে নতুন করে তুলে ধরেছে এবং প্রমাণ করেছে যে উদ্যানটি শুধু স্থলচর প্রাণীর জন্য নয়, জলজ ও উভচর প্রাণীর জন্যও এক অপরিহার্য আশ্রয়স্থল।
