গুয়াহাটির মনোরম নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত মা কামাখ্যা মন্দিরে শুরু হতে চলেছে বার্ষিক অম্বুবাচী মেলা। ২২ জুন থেকে শুরু হচ্ছে নারী শক্তি ও উর্বরতার প্রতীক দেবী কামাখ্যার এই পবিত্র ঋতুচক্রের উদযাপন। প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং গভীর আধ্যাত্মিকতার মিশ্রণে এই লালিত উৎসব প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্তকে আকর্ষণ করে, আর এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
তবে, এবারের মেলায় নিরাপত্তার দিকটিতে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সাম্প্রতিক তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণে নীলাচল পাহাড়ে ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়েছে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন আধ্যাত্মিক পরিবেশকে ব্যাহত না করে, তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
একজন ঊর্ধ্বতন জেলা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা এই বছর নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। ভক্তদের কেবল সকাল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মন্দিরে যেতে দেওয়া হবে এবং পাহাড়ে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে না।” দেবীর আশীর্বাদ পেতে তীর্থযাত্রীদের খাড়া পথ ধরে হেঁটে যেতে হবে, কারণ পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছানোর জন্য সমস্ত গাড়ি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দর্শনের পরের দিনই ভক্তদের পাহাড় থেকে নেমে যেতে হবে। ভূমিধস-প্রবণ স্থানগুলোতে NDRF এবং SDRF-এর জরুরি প্রতিক্রিয়া দলগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে প্রয়োজনে দ্রুত সহায়তা প্রদান করা যায়।
মেলার পরিধি সম্পর্কে বলতে গিয়ে গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার পার্থ সারথি মহন্ত বলেন, “গত বছর প্রায় ২৭ লক্ষ ভক্ত অম্বুবাচী মেলায় এসেছিলেন। এবারও আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত, ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”অম্বুবাচী মেলা, যাকে ‘প্রাচ্যের মহাকুম্ভ’ও বলা হয়, তান্ত্রিক রীতিনীতি এবং শক্তি উপাসনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের কয়েকটি মন্দিরের মধ্যে এটি অন্যতম, যেখানে ঋতুস্রাবকে নিষিদ্ধ হিসেবে দেখা হয় না বরং একটি পবিত্র উৎসব হিসেবে উদযাপন করা হয়। কামাখ্যা মন্দির উর্বরতা, নারীত্ব এবং প্রকৃতির চক্রের এক অনন্য উদযাপনের প্রতীক।
