December 6, 2025
AAJ 2

নিশ্চিন্তে এসি-চালিত অফিসে বসে কাজ করছেন, এমন সময় হঠাৎ চোখে চুলকানি শুরু হল! অবাক লাগলেও এর পিছনে কারণ হতে পারে অফিসের শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে এসির মধ্যে থাকলে চোখে দেখা দিতে পারে একধরনের সমস্যা, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘ইভাপোরেটিভ ড্রাই আই’। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) ঘরের বাতাস থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। ফলে ঘরের বাতাস শুষ্ক হয়ে পড়ে, যা সরাসরি প্রভাব ফেলে চোখের উপর। আমাদের চোখের পাতায় কিছু গ্রন্থি থাকে যেগুলি জলীয় ও স্নেহপদার্থ (লিপিড) নিঃসরণ করে চোখকে আর্দ্র রাখে। কিন্তু এসির কারণে এই গ্রন্থিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চোখ শুষ্ক হতে শুরু করে। ক্ষতি হতে পারে অশ্রুগ্রন্থিরও। এর ফলেই দেখা দেয় চুলকানি, জ্বালা, চোখে জল পড়া ইত্যাদি সমস্যা।

‘ড্রাই আইজ’-এর প্রধান লক্ষণগুলো কী কী?

১. হঠাৎ করে বা মাঝে মাঝে চোখের সামনের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া ড্রাই আইজ-এর লক্ষণ।

২. কোনও কারণ ছাড়াই চোখ থেকে অনবরত জল পড়াও ড্রাই আইজের লক্ষণ হতে পারে। চোখ থেকে জল পড়ার অর্থ হল ‘টিয়ার ফিল্ম’ চোখকে আর্দ্র রাখতে পারছে না। তাই শুষ্ক চোখকে আর্দ্র রাখতে জল উৎপাদন করছে।

৩. চোখে ব্যথা ও ক্লান্তিও কিন্তু এর একটি লক্ষণ। চোখে যখন জল কমে যায়, তখন বারবার পলক ফেলে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। ফলে চোখে একটা ক্লান্তি আসে।

‘ড্রাই আইজ’ প্রতিরোধে করণীয়

১. চোখের পাতায় ধুলোবালি জমতে দেবেন না। বাইরে থেকে ফিরে মুখ ধোয়ার আগে হাত-মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। চোখে জলের ঝাপটা দিতে পারেন দিনে ২-৩ বার, কিন্তু তার বেশি নয়—অতিরিক্ত জল চোখকে আরও শুষ্ক করতে পারে।

২. দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি লেন্স পরে থাকবেন না। বেশি সময় পরলে চোখ শুষ্ক হয়ে সমস্যা বাড়তে পারে।

৩. অফিসে কাজের ফাঁকে চোখকে বিশ্রাম দিন। মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করুন বা দূরে তাকিয়ে থাকুন কয়েক সেকেন্ডের জন্য।

৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। এছাড়া তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরি জাতীয় জলসমৃদ্ধ ফল বেশি করে খান।

৫. দিনে ২-৩ বার হালকা গরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে চোখে সেঁক দিতে পারেন। এতে চোখের ক্লান্তি কমে, আরাম মেলে এবং লিপিড গ্রন্থিগুলোর কার্যকারিতা বাড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *