December 6, 2025
Agartala (1)

ছাত্রছাত্রীদের গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বিশেষভাবে কাজ করছে বর্তমান সরকার। ত্রিপুরায় একটি এডুকেশন হাব তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত সিএম সাথ প্রকল্পের অধীনে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আমাদের পড়াশুনা করতে হয়, শিক্ষা নিতে হয়, জানতে হয়। এতে গুণগত শিক্ষা নিতে পারলে জাতির বিকাশ হয় এবং উন্নতির মূলমন্ত্র হিসেবে কাজ করে থাকে। দীর্ঘ বছর বাদে জাতীয় শিক্ষা নীতি (ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি) চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই শিক্ষা নীতিতে সৃজনশীলতা থেকে শুরু করে দক্ষতার উন্নয়ন, চিন্তা চেতনার প্রসার সহ বিভিন্ন বিষয় রাখা হয়েছে। আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আর্থিক সীমাবদ্ধতার জন্য যারা পড়াশুনা করতে পারছে না, তাদের কথা মাথায় রেখে কাজ করছে শিক্ষা দপ্তর। এই সরকার যা যা বলছে সেগুলি কার্যকর করছে। যারা আর্থিক ও সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারণে মেধা থাকা সত্ত্বেও পড়াশুনা করতে পারছে না তাদের জন্য এই সিএম সাথ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। আজ এই অনুষ্ঠানে সারা রাজ্য থেকে প্রায় ২০০ জন ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচন করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে পড়াশুনার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের আরো উৎসাহিত করা।

যেটা রাজ্য ও দেশের জন্যও ভালো। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের যথাযথ শিক্ষা দানে এই সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ছেলেমেয়েদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের জন্য চেষ্টা করছে সরকার। সিএম সাথ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি হবে। এই প্রকল্পে স্বচ্ছতা বজায় রেখে ছাত্রছাত্রীদের নির্বাচন করা হয়েছে। বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে সেজন্য মিশন মুকুল কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য সহর্স কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে পড়াশুনার চাপ থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে আনন্দের সঙ্গে পড়াশুনা করতে পারে ছেলেমেয়েরা। পিএম পোষণ প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়নে মনিটরিং করা হচ্ছে। প্রায় ১২৫টি স্কুলকে বিদ্যাজ্যোতিতে উন্নীত করা হয়েছে। নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের বিনামূল্যে বাই সাইকেল দেওয়া হয়েছে। যার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজারের অধিক। চিফ মিনিস্টার অ্যানুয়েল স্টেট অ্যাওয়ার্ড ফর অ্যাকাডেমিক অ্যাক্সেলেন্স প্রকল্পে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আইপ্যাড, ট্যাব দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৮৪টি স্কুলকে পিএম শ্রী রূপান্তর করা হয়েছে। বিজ্ঞানের প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করতে ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এক্সাম, ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এক্সাম চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষতা বাড়াতে প্রায় ৭,৮০০ জনের অধিক শিক্ষক শিক্ষিকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ককবরক, চাকমা, মিজো ও অন্যান্য ভাষায় অনেকগুলি বই প্রকাশ করা হয়েছে।

জেআরবিটি’র মাধ্যমে প্রায় ৫,২০০ এর অধিক শিক্ষক ও ১১৫ জনের মতো লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে এখন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রাজ্যে ট্রিপল আইটি চালু হয়েছে। লক্ষ্য প্রকল্পে আইএএস/ আইপিএস প্রত্যাশী ১০ জনকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা হয়েছে। ত্রিপুরায় একটি ন্যাশনাল ফরেনসিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, একটি ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটি হয়েছে। ত্রিপুরায় একটি এডুকেশন হাব তৈরি করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্যে এখন অনেক সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। অ্যাগ্রিকালচার কলেজ, ভেটেরিনারি কলেজ, সেন্ট্রাল সংস্কৃত ইউনিভার্সিটি, ৩টি মেডিকেল কলেজ, ১টি সরকারি ডেন্টাল কলেজ, ১টি ফার্মেসি কলেজ, বিএসসি নার্সিং কলেজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও বেসরকারিভাবে আরো বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি গড়ে তোলা হচ্ছে। নলছড়ে একটা মহিলা কলেজ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টিআইটি কলেজকে ইউনিভার্সিটি এবং মহিলা কলেজকে ইউনিভার্সিটি করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার সহ শিক্ষা দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *