নয়াদিল্লি, ১৮ জুলাই — চীনের পক্ষ থেকে আরোপিত অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ভারতের ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে সতর্ক করেছে ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স অ্যাসোসিয়েশন (ICEA)। সংস্থাটি ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ভারতের বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলে (GVC) গভীরতর সংযুক্তিকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং উৎপাদন সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে দুর্বল করছে।
ICEA চিহ্নিত করেছে তিনটি প্রধান চোকপয়েন্ট:
- উৎপাদন যন্ত্রপাতি রপ্তানিতে বাধা: চীন গত আট মাস ধরে ভারতে উচ্চ-নির্ভুলতা যন্ত্রপাতি, যেমন হেভি-ডিউটি বোরিং মেশিন, রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। বিকল্প উৎস যেমন জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করলে খরচ ৩–৪ গুণ বেশি পড়ে।
- দুর্লভ খনিজ ও রেয়ার আর্থ উপাদানে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ: স্মার্টফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্যের জন্য অপরিহার্য এই উপাদানগুলির রপ্তানি সীমিত হওয়ায় ভারতীয় কারখানাগুলিতে কাঁচামালের ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
- চীনা প্রযুক্তিগত কর্মীদের প্রত্যাহার: চীনা, তাইওয়ানিজ ও ভারতীয় কোম্পানিতে কর্মরত শতাধিক চীনা প্রকৌশলীকে হঠাৎ করে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা প্রযুক্তি স্থানান্তর ও উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
ICEA জানিয়েছে, FY২৫-এ ভারতের স্মার্টফোন উৎপাদন $৬৪ বিলিয়ন ছুঁয়েছে, যার মধ্যে $২৪.১ বিলিয়ন রপ্তানি হয়েছে। এই সাফল্য উৎপাদন-সংযুক্ত প্রণোদনা (PLI) প্রকল্পের ফল এবং সরকারের $৫০০ বিলিয়ন ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনের লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে চীনের এই পদক্ষেপগুলি ভারতের রপ্তানি সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
সংস্থাটি সরকারের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের আবেদন জানিয়েছে, যাতে সরবরাহ শৃঙ্খলা বজায় রাখা, উৎপাদন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর নিশ্চিত করার জন্য নীতিগত হস্তক্ষেপ করা যায়। ICEA সতর্ক করেছে, অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে ভারতের ইলেকট্রনিক্স খাতে সাম্প্রতিক অগ্রগতি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
