December 6, 2025
27

কামাখ্যা মন্দিরকে ঘিরে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিদ্বেষপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর গুজবের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় ও নাগরিক সমাজের নেতারা। ঐতিহ্যবাহী এই শক্তিপীঠকে কেন্দ্র করে কিছু ইউটিউব চ্যানেল ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অপব্যাখ্যামূলক ও কুৎসিত মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বহু বিশিষ্ট নাগরিক।

মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কামাখ্যা মন্দির শুধুমাত্র তন্ত্রসাধনার কেন্দ্র নয়, এটি একটি প্রাচীন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। দেবী সতীর যোনি পতনের স্থান হিসেবে এই মন্দির হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র শক্তিপীঠ হিসেবে বিবেচিত। মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনো মূর্তি নেই, বরং একটি যোনি-আকৃতির পাথর ও প্রাকৃতিক প্রস্রবণই পূজিত হয় দেবীর প্রতীক হিসেবে।

সম্প্রতি কিছু ভিডিও ও পোস্টে কামাখ্যা মন্দিরকে “জাদুটোনা” ও “অশুভ শক্তির কেন্দ্র” হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণ ও ভক্তদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। এই প্রেক্ষিতে মন্দির কমিটি ও নাগরিক সমাজ তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও অসম সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন এই ধরনের গুজব ছড়ানো চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও গবেষকরা মনে করছেন, কামাখ্যা মন্দিরের তন্ত্রচর্চা একটি আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক অনুশীলন, যা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা অনুচিত। তাঁরা বলেন, “তন্ত্র মানেই অন্ধকার নয়, এটি শক্তির সাধনা ও আত্মজাগরণের পথ।”

আসাম সরকারের এক মুখপাত্র জানান, “ধর্মীয় স্থানের মর্যাদা রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *