বঙ্গাইগাঁও, ২৩ জুলাই, ২০২৫ — অসমের বঙ্গাইগাঁও জেলায় এক তরুণ মহিলা ইঞ্জিনিয়ার জোশিতা দাস-এর রহস্যজনক আত্মহত্যার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গুয়াহাটির শিলপুখুরি এলাকার বাসিন্দা জোশিতা, যিনি পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (PWD)-এর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, সোমবার তার ভাড়া বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যান। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া একটি সুইসাইড নোটে তিনি দুই সিনিয়র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন।
নোটে জোশিতা উল্লেখ করেন যে, এসডিও আমিনুল ইসলাম এবং এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দিনেশ মেধি তাকে একটি স্টেডিয়াম প্রকল্পে অপূর্ণ কাজের বিল অনুমোদনের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি লেখেন, “আমি একা, অফিসে কেউ গাইড করে না। আমি ক্লান্ত, কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।” তিনি আরও জানান, প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা ও নথিপত্র সরবরাহ করা হয়নি এবং ঠিকাদারের পক্ষেও কোনো সাইট ইঞ্জিনিয়ার নিযুক্ত ছিল না।
জোশিতার পরিবার অভিযোগ করে যে, তাকে দুই কোটি টাকার বিল অনুমোদনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল, যেখানে প্রকৃত কাজের মূল্য ছিল এক কোটি টাকা। তার বাবা বলেন, “সে বলেছিল, একদিন তাকে জেলে পাঠানো হবে, আর তার সিনিয়রদের শুধু বদলি করা হবে।”
পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) ২০২৩-এর ধারা ১০৮ অনুযায়ী আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করেছে এবং অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। সুইসাইড নোটটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানান, “তদন্ত এখনও চলছে, তবে আপাতত দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
এই ঘটনার পর রাজ্যজুড়ে সরকারি কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে এবং স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে। জোশিতার মৃত্যু আবারও সরকারি দপ্তরে কর্মস্থলের মানসিক চাপ ও দুর্নীতির সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
