December 6, 2025
1

ভারতের চা শিল্প এক গুরুতর সংকটের মুখোমুখি, যার মূল কারণ কেনিয়া থেকে আসা সস্তা আমদানি চা। এই অস্বাভাবিক আমদানির ফলে বাজার ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, এবং আসামের চা চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে কেনিয়া থেকে চা আমদানি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫% বেশি। জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে আমদানির পরিমাণ ৪.৬১ মিলিয়ন কেজি থেকে বেড়ে ৬.৬৯ মিলিয়ন কেজিতে দাঁড়িয়েছে।

কেনিয়ার চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আফ্রিকান দেশটি ভারতে ১৩.৭ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২৮৮% বেশি। এই বিপুল পরিমাণ আমদানি, আসামের নিজস্ব ২০% উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে মিলে বাজারে চায়ের এক বিশাল জোগান তৈরি করেছে, যার ফলে দাম ভয়ংকরভাবে পড়ে গেছে।

“গুয়াহাটি চা নিলাম ক্রেতা সমিতির সচিব দীনেশ বিহানি জানান, এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত চায়ের গড় দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ টাকা কমেছে।” যদিও উন্নত মানের চায়ের দাম কিছুটা ভালো আছে, নিম্নমানের চায়ের চাহিদা একেবারে কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের বাইরে বিক্রিও কমেছে, যা দামের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।

শিল্প বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কম দামের আমদানি করা চা ভারতীয় চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে ‘ভারতীয়’ হিসেবে বিক্রি করছেন, যা কেবল কর ফাঁকি দিচ্ছে না, বরং বিশ্ববাজারে ভারতীয় চায়ের সুনামও নষ্ট করছে। টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি সন্দীপ সিংহানিয়া বলেন, “এই মিশ্রণের কারণে প্রকৃত উৎপাদকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।”

২০২৪ সালে মোট চা আমদানি ৮২% বেড়ে ৪৪.৫৩ মিলিয়ন কেজিতে পৌঁছেছে, যার প্রায় ৭৫% এসেছে কেনিয়া ও নেপাল থেকে। এই পরিস্থিতিতে চা শিল্প কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নত ট্র্যাকিং ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছে, যাতে ভারতীয় চা তার গুণগত মান এবং বাজার উভয়ই রক্ষা করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *