December 6, 2025
12

আসাম রাজ্যে ন্যাশনাল হেলথ মিশন (এনএইচএম)-এর অধীনে কর্মরত প্রায় ২৪,০০০ চুক্তিভিত্তিক কর্মী ৫ মার্চ থেকে তিন দিনের রাজ্যব্যাপী ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেন, যার প্রভাব লক্ষীমপুর জেলাসহ সমগ্র রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় গভীরভাবে পড়েছে।

সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রুটিন চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। যদিও জরুরি পরিষেবা সীমিতভাবে চালু রাখা হয়েছে, তবুও বহির্বিভাগ, ল্যাব পরীক্ষা, টিকাকরণ এবং প্রসূতি পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। লক্ষীমপুর জেলা হাসপাতাল এবং আশেপাশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, অনেকেই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।

ধর্মঘটকারীদের প্রধান দাবি হল চাকরি নিয়মিতকরণ, সমান বেতন এবং সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা প্রদান। এনএইচএম কর্মীরা অভিযোগ করেন, তাঁরা প্রায় দুই দশক ধরে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করছেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁদের চাকরির স্থায়িত্ব বা ন্যায্য পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা হয়নি। পূর্বে একাধিকবার সরকারের কাছে দাবি জানানো হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

ধর্মঘটের নেতৃত্বে থাকা কর্মীরা জানান, “আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। যদি সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

লক্ষীমপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ধর্মঘটের কারণে রোগী পরিষেবা পরিচালনা করতে চরম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, এবং বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিষেবা চালু রাখার চেষ্টা চলছে। তবে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় তা কার্যকর হচ্ছে না।

সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, “ধর্মঘটের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

এই ধর্মঘট আসাম রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর এক গুরুতর প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রোগীদের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সমাধানের পথে এগোনো জরুরি হয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *